loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • লিভারপুল হারলো এভারটনের কাছে, ম্যানইউ-এর শেফিল্ড-বাধা অতিক্রম

  • শুরু হলো স্বাধীনতা দিবস জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতা ২০২৪

  • জাভি এই মৌসুম শেষেই বার্সা ছাড়বেন না

  • নতুন করে আরও ৭২ ঘণ্টার তাপ প্রবাহের সতর্কতা জারি

  • ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে ইউভেন্টাস

প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ১৫৫ রানে হারালো টাইগাররা


প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ১৫৫ রানে হারালো টাইগাররা

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৭৬/৯ (লিটন ১০২, আফিফ ৪৫, মাহমুদউল্লাহ ৩৩; মুজরাবানি ৪৭-২, চাতারা ৪৯-১, এনগারাভা ৬১-২, জঙ্গুয়ে ৫১-৩)
জিম্বাবুয়ে: ২৮.৫ ওভারে ১২১ (চাকাভা ৫৪, টেইলর ২৪, মায়ার্স ১৮, মাধেবেরে ৯; সাকিব ৩০-৫, তাসকিন ২২-১, সাইফ ২৩-১, শরিফুল ২৮-১)
ম্যাচ-সেরা: লিটন দাস

লিটন দাসের সেঞ্চুরির পরে সাকিব আল হাসানের পাঁচ উইকেট শিকারের সুবাদে তিন-ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৫৫ রানের বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে সফরকারী বাংলাদেশ। শুক্রবার (১৬ জুলাই) হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে আগে ব্যাট করে টাইগারদের বেঁধে দেওয়া ২৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১২১ রানে অল আউট হয় জিম্বাবুয়ে।

২৭৬ রানের জবাব দিতে জিম্বাবুয়ের হয়ে ইনিংস শুরু করতে নামেন ওয়েসলে মাধেভেরে ও তাদিওয়ানশে মারুমানি। ইনিংসের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তাঁর বলে বোল্ড হয়ে কোনো রান না করে সাজঘরে ফেরেন মারুমানি। 

পঞ্চম ওভারে দ্বিতীয় আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। তিনিও বোল্ড করেন নয় রান করা মাধেভেরেকে। এরপর ১৮ রান করা ডিওন মায়ার্সকে ফিরিয়ে দেন শরিফুল ইসলাম।

ক্যারিয়ারের ২০০তম ওয়ানডে খেলতে নামা টেলর ও রেগিস চাকাভা বিপর্যয় সামলানোর চেষ্টা করেছেন; কিন্তু টেলরকে ২৪ রানের বেশি করতে দেননি সাকিব। 

কোনোমতে দলীয় শতরান পার করার পরে ব্যাটিং-ধসের সম্মুখীন হয় জিম্বাবুয়ে। ১০৫ থেকে ১০৭ রানে যেতেই দলটি হারায় তিন উইকেট। জঙ্গেকে রান আউট করেন আফিফ হোসেন। এর আগে-পরে রায়ান বার্ল ও মুজারাবানিকে ফেরান সাকিব।

ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পক্ষে এখন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি সাকিব। বিশ্বসেরা এ-অলরাউন্ডার এই রেকর্ড গড়ার পথে সাবেক টাইগার-অধিনায়ক পেসার মাশরাফি বিন মুর্তজাকে ছাড়িয়ে গেলেন। ওয়ানডে ফরমেটে ২১৮ ম্যাচে ২৬৯ উইকেট নিয়ে এতদিন শীর্ষে ছিলেন মাশরাফি। সাকিব পাঁচ ম্যাচ কম খেলেই (২১৩ ম্যাচ) ২৭০ উইকেট অতিক্রম করলেন।টেস্টে ২১০ এবং টি-২০ তে ৯২ উইকেট নিয়ে সাকিব দুই ফরম্যাটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হয়েছেন আগেই।

আঘাতের কারণে এদিন তিমিসেন মারুমা ব্যাটিংয়ে নামতে না পারায় ২৮.৫ ওভারে ১২১ রানে ইনিংস শেষ করতে বাধ্য হয় জিম্বাবুয়ে।

এর আগে লিটন দাসের শতরানে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নির্ধারিত ৫০ ওভারে নয় উইকেটে ২৭৬ রান করে বাংলাদেশ দল। ১১৪ বল মোকাবেলায় মাত্র আট বাউন্ডারিতে ১০২ রান করেছেন লিটন। এ-নিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে চতুর্থ এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় সেঞ্চুরি করলেন এই সূচনাকারী ব্যাটসম্যান। তাঁর অপর সেঞ্চুরিটি ছিল এশিয়া কাপ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে।

চলমান জিম্বাবুয়ে সফরের একমাত্র টেস্টে লিটনের ক্যারিয়ার-সেরা ৯৫ রানের ইনিংসটি বাংলাদেশের জয়ের জয়ে মুখ্য ভুমিকা রেখেছিল। 

এদিন টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলর। অবশ্য, টাইগারদের সূচনা মোটেই ভালো ছিল না। মুজারাবানির বলে কোনো রান না করেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এর মাধ্যমে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ডাকের মালিক হয়েছেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এ-নিয়ে ঊনবিংশবারের মতো শূন্য রানে আউট হলেন তামিম, যা বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশিবার শূন্য রানে আউট হওয়ার রেকর্ড।

একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এতদিন তামিম ইকবাল ও হাবিবুল বাশার সুমনের সমান-সংখ্যক ১৮টি শূন্য ছিল। এছাড়া, তিন ফরম্যাট মিলে সমান ৩৩টি করে ডাক ছিল তামিম ও মাশরাফির। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শূন্য রানে আউট হয়ে দুই রেকর্ড থেকেই সুমন ও মাশরাফিকে মুক্তি দিয়েছেন তামিম। তিন ফরম্যাট মিলে তামিমের শূন্যের সংখ্যা এখন ৩৪।

ওয়ানডেতে শীর্ষে থাকলেও টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে শূন্যের তালিকা দেখে হয়তাে খুশি হবেন তামিম। এখন পর্যন্ত দীর্ঘ সংস্করণে কোনো রান না করে তিনি আউট হয়েছেন নয়বার। বাংলাদেশের হয়ে এই তালিকায় সবার উপরে আশরাফুল; তাঁর শূন্য রানে আউট হওয়ার সংখ্যা ১৬।

ওয়ান ডাউনে নেমে প্রথম বলে চার মেরে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সাকিব। তবে, ইনিংস বড় করতে পারেননি এই অলরাউন্ডার। তামিম-বধের নায়ক সেই মুজারাবানির বলে কাট শট খেলতে গিয়ে রায়ান বার্লের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ২৫ বলে ১৯ রান করা সাকিব।

দুই উইকেট যাওয়ার পরে ক্রিজে আসেন মোহাম্মদ মিঠুন। বলের সঙ্গে তাল রেখেই রান করছিলেন তিনি; যদিও ১৯ রানের বেশি করতে পারেননি। টেন্ডাই চাতারার বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন এই ব্যাটসম্যান।

দীর্ঘদিন পরে দলে সুযোগ পেয়ে জায়গা পোক্ত করার সুযোগ পেয়েছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তবে, সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। গারাভার বলে সাজঘরে ফেরার আগে মাত্র পাঁচ রান করেন সৈকত।

দ্রুত চার উইকেট হারিয়ে লিটন-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় টাইগাররা; দুজনে মিলে গড়েন ৯৩ রানের জুটি। বাংলাদেশ যখন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার অপেক্ষায়, তখনই আউট হন রিয়াদ। লুক জঙ্গের স্লোয়ার বলে পুল করতে গিয়ে উইকেটের পিছনে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ৫২ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলেছেন এই অলরাউন্ডার।

এর কিছুক্ষণ পরে মাধেভেরের বলে  ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি করেন এক প্রান্ত আগলে খেলতে থাকা লিটন। ৭৮ বলে ফিফটির পর থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। এরপর সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে খেলেছেন মাত্র ৩২ বল। অবশ্য, সেঞ্চুরিকে বেশিদূর এগিয়ে নিতে পারেননি লিটন; শতরানের পরপরই গারাভার বলে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন তিনি।

শেষদিকে ক্রিজে ঝড় তোলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। হাফ সেঞ্চুরির সম্ভাবনা দেখা দিলেও ৩৫ বলে ৪৫ রান করে আউট হন তিনি। পরপর দুই বলে আফিফ ও মিরাজকে ফেরান জঙ্গে। তাঁর হ্যাটট্রিকের সুযোগ পাওয়া বলে রান আউট হয়েছেন তাসকিন আহমেদও।

শেষদিকে ছয় বলে আট রানে অপরাজিত থাকেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। জিম্বাবুয়ের হয়ে জঙ্গে তিন, গারাভা ও মুজারাবানি দুইটি করে উইকেট শিকার করেছেন।

Loading...