মাদক মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনির জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ মঙ্গলবার (৩১ অগাস্ট) এই জামিন মঞ্জুর করেন। এর আগে, রোববার (২৯ অগাস্ট) উচ্চ আদালতের নির্দেশে দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ পরীমনির জামিন-শুনানির জন্য এই দিনটি ধার্য করেছিলেন। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
গত ২২ অগাস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে পরীমনির জামিন আবেদন করেছিলেন তাঁর আইনজীবী মজিবুর রহমান। এরপর, আদালত শুনানির জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর ধার্য করেন।
গত ২১ অগাস্ট পরীমনিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এ-সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত শেষ না-হওয়া পর্যন্ত এই অভিনেত্রীকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে।
গত ১৯ অগাস্ট ঢাকা মহানগর হাকিম পরীমনির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে, গত ১৩ অগাস্ট ছয়দিনের রিমান্ড শেষে পরীমনি ও তাঁর সহযোগী দীপুকে আদালতে হাজির করা হয়। ওইদিন মামলার তদন্ত শেষ না-হওয়া পর্যন্ত পরীমনিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
এ-সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর পরীমনিকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
আটকের একদিন পরে গত ৫ অগাস্ট পরীমনি ও তাঁর সহযোগীকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর বনানী থানার মামলায় তাঁদের প্রথম দফায় চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এই রিমান্ড শেষে ১০ অগাস্ট পরীমনি ও তাঁর সহযোগী দীপুর দ্বিতীয় দফায় দু’দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
গত ৪ অগাস্ট সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পরীমনিকে তাঁর বনানীর বাসা থেকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। অভিযানে তাঁর বাসা থেকে ভয়াবহ মাদক এলএসডি, মদ ও আইস উদ্ধার করা হয়। পরীমনির ড্রয়িং রুমের কাভার্ড, শোকেস এবং ডাইনিংরুম, বেডরুমের সাইড টেবিল ও টয়লেট থেকে বেশি কিছু মদের বোতল উদ্ধার করা হয়।
সেদিন রাতে পরীমনিকে র্যাব সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যাব। পরেরদিন বিকেলে পরীমনি, চলচ্চিত্র প্রযোজক রাজ ও তাঁদের দুই সহযোগীকে বনানী থানায় নিয়ে যায় র্যাব। এরপর র্যাব বাদি হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় পরীমনি ও তাঁর সহযোগী দীপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, পরীমনি ২০১৬ সাল থেকে মাদক সেবন করতেন। এমনকি, এলএসডি ও আইসও সেবন করতেন তিনি। এজন্য বাসায় একটি ‘মিনিবার’ তৈরি করা হয়েছিল। বাসায় নিয়মিত ‘মদের পার্টি’ করতেন তিনি। চলচ্চিত্র প্রযোজকসহ আরও অনেকে তাঁর বাসায় অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকের সরবরাহ ও পার্টিতে অংশ নিতেন।
২০১৪ সালে বাংলা চলচ্চিত্রে ক্যারিয়ার শুরু করা পরীমনি এ-পর্যন্ত ৩০টি ছবি ও বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনচিত্রে অভিনয় করেছেন। পিরোজপুরের মেয়ে পরীমনি ঢাকাই চলচ্চিত্রের বেশ কিছু আইটেম গানে অংশ নেন, যেগুলোর কয়েকটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
