বাংলাদেশ ক্রিকেট দল স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের কাছে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে পরাজিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২ অগাস্ট) সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়ের কাছে ১০ রানে হেরে গেছে টাইগাররা। ফলে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতলো জিম্বাবুয়ে। তাঁদের সিরিজ জয়ের পেছনে বড় অবদান ছিলো রায়ান বার্লের। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ২৮ বলে ৫৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছেন তিনি। আর ম্যাচ-সেরা হয়েছেন তিনিই।
টাইগাররা প্রথম ম্যাচে আশা জাগিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়য়েছিল। তৃতীয় ম্যাচের প্রথমার্ধে দারুণ নৈপুণ্যের পরে ব্যাট হাতে দ্বিতীয়ার্ধে চরম ব্যর্থতা। এভাবেই শেষ হলো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ হেরে গেছে ১০ রানে। এতে ২-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিল স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে।
হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে সিরিজের তৃতীয়, তথা শেষ ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে আট উইকেটে ১৫৬ রান করে জিম্বাবুয়ে। ২৯ রানের ওপেনিং জুটির পরে দলটি ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে; ৬৭ রানে হারায় ছয় উইকেট। এরপরেই ব্যাট হাতে ঝলসে ওঠেন রায়ান বার্ল। নাসুমের এক ওভারে পাঁচ ছক্কা এক চারে নেন ৩৪ রান। ২৪ বলে করেন ফিফটি। শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে তাঁর সংগ্রহ ২৮ বলে দুই চার ছয় ছক্কায় ৫৪ রান। তাঁর ৩১ বলে ৭৯ রানের সপ্তম উইকেট জুটি গড়া লুক জঙ্গুই ২০ বলে চার চার দুই ছক্কায় ৩৫ রান করেন।
মেহেদি হাসান এবং হাসান মাহমুদ পেয়েছেন দুইটি করে উইকেট। এছাড়া বাকি চার বোলার শিকার করেন একটি করে উইকেট।
এদিন রান তাড়ায় নেমে লিটন দাস ছিলেন মারমুখী মেজাজে। প্রথম ওভারেই মেরেছেন বাউন্ডারি। ভিক্টর নিয়াউচির করা দ্বিতীয় ওভারটাও তিনি বাউন্ডারি দিয়ে শুরু করেছিলেন। তবে, পরের বলেই কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে যান ছয় বলে ১৩ রান করে। মুনিম শাহরিয়ারের জায়গায় সুযোগ পাওয়া আরেক ওপেনার পারভেজ ইমন মাত্র দুই রান করে ফিরলে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তিনে নেমে এনামুল হক বিজয় টানা তিন ম্যাচেই ব্যর্থ হলেন।
১৩ বলে ১৪ রান করে মাধভেরের বলে বোল্ড হলে ৩৪ রানে তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ধস ঠেকাতে গিয়ে ধীরগতির ব্যাটিং শুরু করেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাবেক অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ২০ বলে ১৬ রান করা শান্ত ক্যাচ দিয়ে ফিরলে দলীয় ৬০ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
উইকেটে এসে আক্রমণাত্নক ব্যাটিং শুরু করেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। ৩০ বলে ৩৯ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি ভাঙে সাবেক অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে। ব্রাড ইভান্সের বলে তিনি কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন ২৭ বলে ২৭ রানে। পরের বলেই বর্তমান অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত 'গোল্ডেন ডাক' মারলে ৯৯ রানে ছয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর, আফিফ ও শেখ মেহেদি হাত খুলে খেলার চেষ্টা করেছেন; দলের তখন দুই ওভারে দরকার ২৬ রান। ২৪ বলে ৩৪ রানের সপ্তম উইকেট জুটির অবসান হয় ভিক্টর নিয়াউচির বলে ২২ রান করা মেহেদির বিদায়ে।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৯ রান; সেই সমীকরণ আর মেলানো সম্ভব হয়নি। ওই ওভারে কোনো বাউন্ডারিই মারতে পারেনি বাংলাদেশ। বরং, লুকি জঙ্গুইয়ের বলে আউট হয়েছেন হাসান মাহমুদ (৩)। শেষ বলে প্রয়োজন ছিল ১৩ রান; তবে, বাংলাদেশকে থামতে হয়েছে আট উইকেটে ১৪৬ রান করেই।
ভিক্টর নিয়াউচি ২৯ রানে শিকার করেছেন তিন উইকেট। ব্র্যাড ইভান্স দুই উইকেট পেয়েছেন ২৬ রানে।