loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে রোববার, অ্যাসেম্বলি বন্ধ থাকবে

  • লিভারপুল হারলো এভারটনের কাছে, ম্যানইউ-এর শেফিল্ড-বাধা অতিক্রম

  • শুরু হলো স্বাধীনতা দিবস জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতা ২০২৪

  • জাভি এই মৌসুম শেষেই বার্সা ছাড়বেন না

  • নতুন করে আরও ৭২ ঘণ্টার তাপ প্রবাহের সতর্কতা জারি

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মীরা যুক্ত


সর্বজনীন পেনশন স্কিমে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মীরা যুক্ত

বাংলাদেশ সরকার স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাঁদের অধীনস্থ অঙ্গপ্রতিষ্ঠানসমূহে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে ‘প্রত্যয় স্কিম’ চালু করেছে। এই স্কিম চালুর মাধ্যমে এসব প্রতিষ্ঠানে যে-সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী আগামী ১ জুলাই, ২০২৪ এবং তার পরবর্তী সময়ে নতুন যোগদান করবেন, তাঁদেরকে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ‘প্রত্যয় স্কিম’ চালুর ফলে এসব প্রতিষ্ঠানসমূহের বিদ্যমান কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের স্বার্থ ক্ষুন্ন হবে না এবং তাঁদের বিদ্যমান পেনশন বা আনুতোষিক সুবিধা অক্ষুন্ন থাকবে। গত ১৩ মার্চ সরকার এ-বিষয়ে দু’টি পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করে আলোচ্য প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মচারীগণের জন্য প্রযোজ্য ‘প্রত্যয় স্কিম’-এর রূপরেখা ঘোষণা করেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার (২০ মার্চ) এ-বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়। সরকার এসব প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরোত্তর জীবনের আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা প্রদানে বিদ্যমান ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে ‘প্রত্যয় স্কিম’ প্রবর্তন করেছে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। খবর – স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাঁদের অধীনস্থ অঙ্গপ্রতিষ্ঠানসমূহের চাকুরিতে যাঁদের ন্যুনতম ১০ বছর চাকরি অবশিষ্ট আছে, তাঁরা আগ্রহ প্রকাশ করলে প্রত্যয় স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। প্রত্যয় স্কিমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে অবসর জীবনে মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন বিধায়, ১ জুলাই, ২০২৪ এবং এর পরবর্তী সময়ে নতুন যোগদানকৃত কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণের ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বিদ্যমান ব্যবস্থায় খুব কম সংখ্যক স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাঁদের অধীনস্থ অঙ্গ প্রতিষ্ঠানসমূহে পেনশন স্কিম চালু রয়েছে। এ-ধরনের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীগণ আনুতোষিক স্কিমের আওতাভুক্ত এবং তাঁদের জন্য সিপিএফ (কন্ট্রিবিউটরি প্রোভিডেন্ট ফান্ড) ব্যবস্থা প্রযোজ্য। এই ব্যবস্থায় কর্মচারীগণ চাকুরি শেষে অবসর সুবিধা হিসেবে এককালীন আনুতোষিক প্রাপ্য হন। কিন্তু, মাসিক কোনো পেনশন প্রাপ্য হন না। ফলশ্রুতিতে, অবসরোত্তর জীবনে প্রায় ক্ষেত্রেই আর্থিক অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হন। কর্মচারীদের অবসরোত্তর জীবনের আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা প্রদানে বিদ্যমান ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে সরকার ‘প্রত্যয় স্কিম’ প্রবর্তন করেছে।

‘প্রত্যয় স্কিম’-এ অংশগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর প্রাপ্ত মূল বেতনের ১০ শতাংশ (শতকরা দশ ভাগ) বা সর্বোচ্চ ৫,০০০ টাকা – যেটি কম হয়, তা কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বেতন হতে কর্তন করা হবে এবং সমপরিমাণ অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা প্রদান করবে। এরপর উভয় অর্থ এসব প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীর কর্পাস হিসাবে জমা করবে। এই প্রক্রিয়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীর পেনশন ফান্ড গঠিত হবে এবং এই ফান্ড জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক লাভজনক খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রাপ্য মুনাফা এবং চাঁদা হিসাবে জমাকৃত অর্থের ভিত্তিতে পেনশন প্রদান করা হবে।

বিদ্যমান সিপিএফ ব্যবস্থায় কর্মচারীর মূল বেতনের ১০ ভাগ এবং প্রতিষ্ঠান মূল বেতনের ৮.৩৩ শতাংশ প্রদান করে থাকে। প্রত্যয় স্কিমে প্রতিষ্ঠান প্রদান করবে মূল বেতনের ১০ শতাংশ – যা সিপিএফ ব্যবস্থা থেকে ১.৬৭ শতাংশ বেশি। 

‘প্রত্যয় স্কিম’-এ একজন ব্যক্তি একটি প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পরে মাসিক ২,৫০০ টাকা নিজ বেতন থেকে এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে একই পরিমাণ টাকা ৩০ বছর চাঁদা প্রদান করলে তিনি অবসরের পরে, অর্থ্যাৎ, ৬০ বছর বয়স থেকে মাসিক ৬২,৩৩০ টাকা  হারে পেনশন প্রাপ্য হবেন। এক্ষেত্রে ৩০ বছর ধরে মাসিক ২,৫০০ টাকা হারে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর নিজ বেতন থেকে প্রদত্ত মোট চাঁদার পরিমাণ নয় লাখ টাকা এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থা প্রদত্ত মোট চাঁদার পরিমাণ নয় লাখ টাকা। 

অর্থাৎ, প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট কর্মচারী মিলিয়ে সর্বমোট চাঁদার পরিমাণ হবে ১৮ লাখ টাকা। তিনি যদি ৭৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন, তাহলে ১৫ বছরে পেনশন প্রাপ্য হবেন ১ কোটি ১২ লাখ ১৯ হাজার ৪০০ টাকা, যা সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর নিজ জমার ১২.৪৭ গুণ। আজীবন পেনশন প্রাপ্য হবেন বিধায় এই পরিমাণ আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্য মুনাফার হার বৃদ্ধি পেলে মাসিক পেনশনের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে। 

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের যাবতীয় খরচ সরকার কর্তৃক নির্বাহ করা হবে বিধায় চাঁদা দাতার কর্পাস হিসাবে জমাকৃত অর্থ এবং বিনিয়োগলব্ধ আয় সম্পূর্ণ চাঁদা দাতার অ্যানুইটি হিসাবায়নের মাধ্যমে মাসিক পেনশন নির্ধারিত হবে। জমাকৃত চাঁদার উপর বিনিয়োগ রেয়াত পাওয়া যাবে এবং প্রাপ্য পেনশন আয়করমুক্ত হবে। স্কিমটি রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টিযুক্ত হওয়ায় এটি শতভাগ ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ। এই স্কিমে নিবন্ধিত কর্মচারী পেনশনযোগ্য বয়সে উপনীত হওয়ার পরবর্তী মাস থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাঁর ব্যাংক একাউন্টে মাসিক পেনশনের অর্থ পেতে থাকবেন, যা তাঁকে মোবাইল এসএমএস-এর মাধ্যমে অবহিত করা হবে। এক্ষেত্রে তাঁকে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ বা অন্য কোনো দপ্তরে যাওয়ার বা কোনো প্রকার প্রমাণক দাখিলের প্রয়োজন হবে না। প্রত্যয় স্কিমটি নতুন কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের জন্য আকর্ষণীয় এবং আর্থিক নিরাপত্তা বিধানে কার্যকর একটি ব্যবস্থা।

Loading...