পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বুধবার জানিয়েছেন, বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) দুইটি পৃথক চালানের মাধ্যমে ভারত থেকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ৩৫ লাখ ডোজ পাবে। এছাড়া, রাশিয়া ও চীনসহ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশে ভ্যাকসিন পাঠানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, “আগামীকাল আমরা ভারত থেকে উপহার হিসাবে ২০ লাখ ডোজ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন পেয়ে যাবো। এছাড়া, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পৃথক চালানে ভারত থেকে আরও ১৫ লাখ ভারতীয় ভ্যাকসিন আসবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাজধানীতে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছিলেন। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
মোমেন বলেন, আগামীকালের (২১ জানুয়ারি) চালানের পরে ধারাবাহিকভাবে ভারত থেকে ভ্যাকসিনের চালান আসবে। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া ও চীনসহ কয়েকটি দেশ তাঁদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বাংলাদেশে প্রেরণের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সামনের দিনগুলোতে আমাদের কাছে প্রচুর ভ্যাকসিন থাকবে। আগামীকাল ভারত থেকে শিপমেন্ট পাওয়ার পরে সরকার জনগণের মধ্যে ভ্যাকসিন প্রদান শুরু করবে।’
এদিকে, বুধবার সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনটি ১৮-ঊর্ধ্ব সকল বাংলাদেশী নাগরিককে বিনামূল্যে প্রদান করা হবে। সরকার, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল্স লিমিটেড (বিপিএল) এবং সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (এসআইআই) এর মধ্যে গত ৫ নভেম্বর স্বাক্ষরিত একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং পরবর্তী সময়ে ১৩ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ প্রাথমিকভাবে এসব টিকা পাচ্ছে। চুক্তিটি অনুযায়ী বাংলাদেশ সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে পর্যায়ক্রমে তিন কোটি ডোজ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন পাবে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে জানান, ফেব্রুয়ারির প্রথম থেকে সরকার দেশব্যাপী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বিতরণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, তাঁর অফিস সারাদেশে কোভিড-১৯ টিকাদান করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যাতে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে টিকাদান চালু করা যেতে পারে।
ফেব্রুয়ারিতে প্রায় ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চিকিৎসা পেশাদার, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, মিডিয়াকর্মী, স্থানীয় সরকার সংস্থা কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রবীণ ব্যক্তি ও অন্যান্য কোভিড-১৯ রোগীদের কাছাকাছি অবস্থানকারী ব্যক্তিদেরকে টিকা লাভের জন্য অগ্রাধিকার গ্রুপ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য দুই ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োজন হবে। প্রথম ডোজ টিকা গ্রহণের আট সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ দিতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ প্রাথমিক পর্যায়ে ৫০ লাখ লোককে টিকা প্রদানের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। কারণ, প্রতি মাসে প্রায় ৫০ লাখ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন আসবে।
সরকার এ-পর্যন্ত ছয়জন স্বাস্থ্যকর্মীর সমন্বয়ে মোট ৭,৩৪৪ টি ভ্যাকসিন বিতরণ দল গঠন করেছে। এছাড়া, প্রায় ৪২,০০০ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
