আগামী নভেম্বরে ঢাকায় ৩৭তম আইএএফ ওয়ার্ল্ড ফ্যাশন কনভেনশন ২০২২ আয়োজন করা হবে। ইন্টারন্যাশনাল অ্যাপারেল ফেডারেশন (আইএএফ), বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এবং বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ) যৌথভাবে কনভেনশনের আয়োজন করবে। একইসাথে ১২ থেকে ১৮ নভেম্বর ঢাকায় ‘মেইড ইন বাংলাদেশ উইক’ আয়োজন করা হবে।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান ও আইএএফ মহাসচিব ম্যাথিয়াস ক্রিয়েটি রাজধানীর একটি হোটেলে শনিবার (১৪ মে) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই কনভেনশনের ঘোষণা দেন। এ-সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিকেএমইএ সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান। তাঁরা ৩৭তম আইএএফ ওয়ার্ল্ড ফ্যাশন কনভেনশন এবং ‘দি মেইড ইন বাংলাদেশ উইক’-এর লোগোও উন্মোচন করেন। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
আইএএফ কনভেনশনটি তিনদিনব্যাপী হবে, যেখানে প্রথম দিনে আইএএফ বোর্ডের সকল পরিচালকদের অংশগ্রহণে একটি বোর্ড সভা আয়োজন করা হবে। কনভেনশনের অংশ হিসেবে একটি দিনব্যাপী সম্মেলনও হবে, যেখানে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বক্তাগণ অংশগ্রহণ করবেন। এতে ব্র্যান্ড, রিটেইলার, সরবরাহকারী (সাপ্লায়ার্স), শিল্প নেতা এবং একাডেমিকসহ বক্তারা ব্যবসার বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রবণতা, চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাব্য সমাধানগুলোর উপর আলোকপাত করবেন, যার উদ্দেশ্য হবে – শিল্পব্যাপী প্রচেষ্টা গ্রহণ করে সকলের জন্য একটি উত্তম ফ্যাশন ইন্ডাষ্ট্রি নিশ্চিত করা।
বার্ষিক ওয়ার্ল্ড ফ্যাশন কনভেনশন ৪০টি দেশের প্রতিনিধিত্বকারী পোশাক শিল্প সমিতি, নেতৃস্থানীয় ব্র্যান্ড এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারসহ আইএএফ-এর সকল সদস্যগণকে একত্রিত করবে। কনভেনশনটি প্রতিনিধি এবং অংশগ্রহণকারীগণ নিজেদের মধ্যে নেটওয়ার্কিং, অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং শিল্পের ভবিষ্যত দিক বিষয়ে ধারনা প্রদানে সহায়তা করবেন।
অন্যদিকে, বিজিএমইএ কর্তৃক অনুষ্ঠেয় ‘দি মেইড ইন বাংলাদেশ উইক’-এর লক্ষ্য হলো – বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের ইতিবাচক, চিত্তার্কষক আখ্যানগুলো, বিশেষ করে নিরাপদ কর্মপরিবেশ, পরিবেশগত টেকসই উন্নয়ন এবং শ্রমিকদের কল্যাণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে শিল্প যে-অনন্য অগ্রগতি অর্জন করেছে, সেগুলো উপস্থাপন করে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পোশাক শিল্পকে তুলে ধরা।
বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উৎসাহব্যাঞ্জক গল্পগুলো বলার পাশাপাশি এই শিল্পের সম্ভাবনা, শিল্পের শক্তি, সক্ষমতা এবং বিশ্বব্যাপী ক্রেতাদের কাছে অগ্রাধিকার পাওয়া এবং প্রতিযোগিতামূলকভাবে পছন্দসই থাকার জন্য শিল্পের ভবিষ্যত অগ্রাধিকারগুলো বৈশ্বিক ক্রেতা এবং বিশ্ববাসীর মাঝে বিশেষভাবে তুলে ধরা হবে।
সপ্তাহব্যাপী আয়োজনে থাকবে – ৩৭তম আইএফ ওয়ার্ল্ড ফ্যাশন কনভেনশন, তৃতীয় ঢাকা অ্যাপারেল সামিট, বাংলাদেশ পোশাক প্রদর্শনী, ডেনিম এক্সপো, সাস্টেইনেবল ফ্যাশন অ্যাওয়ার্ড এবং ফ্যাশন ফট্রোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান, ফ্যাশন ও সাংস্কৃতিক উৎসব এবং বিজিএমইএ ইনোভেশন সেন্টারের গ্লোবাল লঞ্চিং।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘যেহেতু আমরা নির্দিষ্ট মাত্রার প্রবৃদ্ধি এবং গতি অর্জন করেছি, তাই এখন আমাদের প্রবৃদ্ধির পরবর্তী পর্যায়ে যাওয়ার সময় এসেছে। আমাদের অগ্রগতি এবং সম্ভাবনাগুলো পাশ্চাত্যের কাছে আমাদেরকে অন্যতম সাস্টেইনেবল সোর্সিং পার্টনার করে তুলেছে এবং এই অবস্থান ধরে রাখার জন্য আমাদেরকে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’
তিনি বলেন, ৩৭তম আইএএফ ওয়ার্ল্ড ফ্যাশন কনভেনশন আরও টেকসই উৎপাদন ও সোর্সিং নিশ্চিত করতে ক্রেতা, সরবরাহকারী ও বৈশ্বিক স্টেকহোল্ডারসহ সরবরাহ চেইনের মূখ্য ভূমিকা পালনকারীদের মধ্যে একটি বৃহত্তর সহযোগিতা গড়ে তোলার সূচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ‘মেইড ইন বাংলাদেশ উইক’-এ পোশাক শিল্পের আকর্ষণীয় ইতিবাচক দিকগুলো উপস্থাপন করা হবে।
আইএফএ মহাসচিব ম্যাথিয়াস ক্রিয়েটি বলেন, ‘সম্ভবত আগের যেকোনো সময় চেয়ে পোশাক প্রস্তুতকারকগণ এখন শিল্প রূপান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন; যা আমাদের দরকার। তাই, ৩৭তম আইএএফ ওয়ার্ল্ড ফ্যাশন কনভেনশন উপস্থাপিত আন্তর্জাতিক মঞ্চে, বাংলাদেশি পোশাক শিল্প, শিল্পের বর্তমান প্রধান চ্যালেঞ্জগুলোর সমাধানের উৎস হিসেবে নিজেকে তুলে ধরবে।’
বিজিএমইএ পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেলের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন – বিজিএমইএ প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মো. শহিদউল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন, সহ-সভাপতি মিরান আলী, সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী, বিকেএমইএ সহ-সভাপতি আখতার হোসেন অপূর্ব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
