loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • আট বছর পরে ইতালিয়ান সুপার কাপ জিতলো এসি মিলান

  • ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত; তিব্বতে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে

  • ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ আগামী মাসে প্রতিষ্ঠা করে হবে: নাহিদ

  • শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

  • দেশে ২০ জানুয়ারি থেকে ভোটার তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু

অ্যানফিল্ডে লিভারপুলকে রুখে দিলো ম্যানইউ


অ্যানফিল্ডে লিভারপুলকে রুখে দিলো ম্যানইউ

অ্যানফিল্ড রোডের চারপাশ রোববার (৫ জানুয়ারি) সারাদিন ছিল তুষারে ঢাকা। পথঘাট, মাঠের ছবি দেখে মনে হচ্ছিলো – সাদা ছাড়া পৃথিবীতে আর কোনো রঙের অস্তিত্বই নেই। সাদায় ছেয়ে যাওয়া অ্যানফিল্ডে লিভারপুল-ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত হবে কি-না – তা নিয়েও ছিল শঙ্কা। এমন মনমরা পরিবেশে কিছুটা প্রাণ ফেরালেন লিভারপুল ও ইউনাইটেডের দুই কিংবদন্তি জেমি ক্যারাঘার আর গ্যারি নেভিল। ম্যাচের আগে ভাইরাল এক ভিডিওতে ক্যারাঘারকে দেখা যায় মাঠের ভেতর থেকে বেলচা দিয়ে তুষারকণা বাইরে ফেলতে, আর নেভিল ভেতরে।

প্রতীকী এই  দৃশ্যের অর্থ – ক্যারাঘার চান ম্যাচটা খেলা হোক, আর নেভিল চান-না। অবশ্য পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দলের চৌদ্দ নম্বরে থাকা দলের খেলতে চাওয়ার কথাও নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক ইউনাইটেড সমর্থকের ভাবটা এমন ছিল এমন যে – ম্যাচ বাতিল হওয়াই ভালো। আর এই লিভারপুলের মুখোমুখি কে-ই-বা হতে চাইবে? আর্নে স্লটের দল গত সেপ্টেম্বরে ওল্ড ট্রাফোর্ডে গিয়ে তিন গোল দিয়ে এসেছিল, অ্যানফিল্ডে এবার কি না কি হয়!

ম্যানইউর ৭-০ গোলে পরাজয়ের স্মৃতি তো এখনো বেশি পুরোনো হয়নি। তার উপর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা চার ম্যাচে পরাজয়। এমনকি বোর্নম্যাথের বিপক্ষেও হজম করতে হয়েছে তিন গোল। অন্যদিকে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা লিভারপুল সমর্থকরাও ছিলেন আরেকটি সহজ জয়ের অপেক্ষায়; ব্যাপারটা যেন এমন – এই ইউনাইটেড কি আর প্রতিরোধ গড়বে!

এদিন ম্যাচের শুরুতে তুষারের প্রভাব দুই দলের খেলোয়াড়দের পাগুলোকেও আড়ষ্ট করে রেখেছিল। ৪৫ মিনিটের খেলায় না-চাইলেও যেমন কিছু সু্যোগ তৈরি হয়, এই ম্যাচের প্রথমার্ধেও তা-ই। আলাদা করে বলার মতো কিছু নয়। এমনকি দুই দলে খেলা দেখে বিশেষ পার্থক্যও করা যাচ্ছিল-না।

তবে দ্বিতীয়ার্ধে তুষারের প্রভাব কমে এলে আড়ষ্টতা ভাঙলো মোহাম্মদ সালাহ, কোডি গাকপো, ব্রুনো ফার্নান্দেজ আর আমাদ দিয়ালোদের পা। শুরুটা করেছিল ইউনাইটেডই। ঠান্ডা অ্যানফিল্ডকে আরও স্তব্ধ করে দিয়ে গোল করলেন লিসান্দ্রো মার্তিনেজ।

দি রেডস ঘরের মাঠে পয়েন্ট তালিকার ১৪ নম্বর দলের কাছ থেকে ৫২ মিনিটে গোল খেয়ে খানিকটা হতচকিতই হয়ে গিয়েছিল। যদিও চ্যাম্পিয়ন মেজাজে ছুটতে থাকা লিভারপুল ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি। গাকপো ৫৯ মিনিটে করলেন গোল। এরপরের ৭০ মিনিটের গোলটা সালাহর। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে গোলটা যেন এই মিসরিয়র অধিকারে পরিণত হয়েছে। পেনাল্টি থেকে করা সালাহর গোলই এগিয়ে দিলো লিভারপুলকে। এটি ইউনাইটেডের বিপক্ষে লিগে ১৫ ম্যাচে সালাহর ত্রয়োদশ গোল। আর সব মিলিয়ে ১৭ ম্যাচে ১৬।

এই গোল খেয়েই দি রেড ডেভিল্স জেগে উঠলো। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া দলটাকে হয়তো কেউ মনে করিয়ে দিয়েছিল, কাদের বিপক্ষে তাঁরা খেলছেন, কিংবা এই ম্যাচের গুরুত্ব কেমন। কারণ যা-ই হোক, পরের সময়টুকুতে ইউনাইটেড ছিল বদলে যাওয়া এক দল। এ-সময় ইউনাইটেড রক্ষণভাগে দৃঢ়তা দেখানোর পাশাপাশি আক্রমণেও ভীতি ছড়াচ্ছিল। আমাদ ৮০ মিনিট গত মৌসুমে এফএ কাপ কোয়ার্টার-ফাইনালের স্মৃতি ফিরিয়ে ইউনাইটেডকে সমতায় ফেরান।

ম্যানইউ অবশ্য অ্যানফিল্ডে পাওয়া জয়সম এই ম্যাচটাতে জিততেও পারতো। হ্যারি ম্যাগুয়ার সুযোগ পেয়েও প্রকৃত স্ট্রাইকার হয়ে উঠতে পারেননি। লিভারপুল বক্সের ভেতর শেষ মুহূর্তে তাঁর প্রায় অবিশ্বাস্য মিসের কারণেই জয়টা ফেলে আসতে হয়েছে ইউনাইটেডকে।

শেষ পর্যন্ত টানা চার হারের পরে এদিন রাতেও জয়টা পায়নি ইউনাইটেড। ম্যাচ ড্র হয়েছে ২-২ গোলে। যাহোক, এরপরও লিভারপুলের বিপক্ষে তাঁদের এমন নৈপুণ্য দেখে কে বলবে – এই দলটাই লিগে গত ছয় ম্যাচের পাঁচটিতেই পরাজিত হয়েছিল।

Loading...